ইজরায়েলে হামলার’ প্রতিশ্রুতি থেকে পিছু হটল পাকিস্তান, ইরানের ক্ষোভ তুঙ্গে

ইরানের সঙ্গেও ‘গদ্দারি’ করল পাকিস্তান! পরমাণু অস্ত্র ইস্যুতে ইউ-টার্ন ইসলামাবাদের

ইসলামাবাদ: শুধু ভারতের বিরুদ্ধেই নয়, পাকিস্তানের ‘দ্বিচারিতা’ এবার ধরা পড়ল মুসলিম বিশ্বের মধ্যেও। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে— এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাকিস্তান, এমনটাই দাবি করেছিল ইরান। কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাক সরকার সেই প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করে ইউ-টার্ন নিল।



ঘটনার সূত্রপাত ইরানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সদস্য এবং রেভলিউশনারি গার্ডের শীর্ষ কর্তা জেনারেল মোহসেন রেজাই-র এক বক্তব্য থেকে। তিনি প্রকাশ্যে জানান, “যদি ইজরায়েল ইরানের উপরে পরমাণু হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তান আমাদের হয়ে পরমাণু হামলা চালাবে ইজরায়েলে। পাকিস্তান এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।”

এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বহু বিশেষজ্ঞ মনে করতে শুরু করেন, ইরান-পাকিস্তান জোট হয়তো বড় কিছু পদক্ষেপের দিকে এগোচ্ছে।

ইউ-টার্ন ইসলামাবাদের

কিন্তু, একই দিনেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ সংসদে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “পাকিস্তান এমন কোনও পরমাণু সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়নি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনও পক্ষের হয়ে পরমাণু যুদ্ধ চাই না।”

সমর্থন, কিন্তু সীমিত

যদিও পাকিস্তান ইরানকে একেবারে একঘরে করেনি। ১৪ জুন জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে খোয়াজা আসিফ বলেন,

“ইজরায়েল একযোগে ইরান, ইয়েমেন এবং প্যালেস্টাইনে আক্রমণ চালাচ্ছে। মুসলিম বিশ্ব যদি আজ ঐক্যবদ্ধ না হয়, তাহলে আমাদের সবার ভবিষ্যত অন্ধকার।”

তবে এই বক্তব্য ছিল কেবল ‘নৈতিক সমর্থন’-এর পর্যায়ে। পরমাণু অস্ত্রের প্রশ্নে কোনও আগ্রাসী অবস্থান নিতে ইসলামাবাদ নারাজ বলেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

কী ইঙ্গিত দিচ্ছে এই ঘটনা?

  1. পাকিস্তান আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভারসাম্য রক্ষা করছে— একদিকে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছে, অন্যদিকে আমেরিকা বা ইজরায়েলের সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের ঝুঁকি নিচ্ছে না।

  2. ইরান বিচলিত— কারণ তারা মুসলিম দেশ পাকিস্তানের ওপর ভরসা করেছিল, এখন সেই সমর্থন ঝুলে গেল।

  3. পরমাণু অস্ত্র নিয়ে দায়িত্বশীল নীতি মেনে চলছে পাকিস্তান, তবে এর পিছনে পশ্চিমি দেশগুলোর চাপও গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার:

এই ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য আবারও প্রকাশ পেল। পরমাণু ইস্যুতে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে— তাই পাকিস্তানের সতর্ক ভঙ্গি কূটনৈতিকভাবে হয়তো যৌক্তিক, কিন্তু ইরানের মতো মিত্র দেশের কাছে তা ‘গদ্দারি’ হিসেবেই ধরা পড়ছে।


কোন মন্তব্য নেই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Questions and Answers

© all rights reserved
STASNET