ইরান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ইরান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মধ্যপ্রাচ্যে রণভূমির আবহ, তেহরানের আকাশসীমা দখলের দাবি নেতানিয়াহুর

নয়াদিল্লি: চতুর্থ দিনে পড়ল ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে ধোঁয়া, মাটিতে মৃতদেহ। গতরাত থেকে ইজরায়েলি ফাইটার জেট বারবার ঢুকে পড়েছে তেহরানের আকাশে। ইরানের অভিযোগ, শুধু তৈল শোধনাগার বা পরমাণু কেন্দ্রই নয়, জনবসতিপূর্ণ এলাকাতেও হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলি সেনা।

পাল্টা জবাবে ইরান ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়েছে ইজরায়েলের হাইফা সংশোধনাগারে। ফোর্ডোর পরমাণু স্থাপনায় বিস্ফোরণের জেরে রিখটার স্কেলে ২.৫ তীব্রতার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২২৪ জন।

এই পরিস্থিতিতেই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, “তেহরানের আকাশসীমার কন্ট্রোল এখন আমাদের হাতে।” তবে এই উত্তেজনার মাঝে বাতিল হয়েছে ওমানে নির্ধারিত আমেরিকা-ইরান পরমাণু বৈঠক।



ট্রাম্প বনাম নেতানিয়াহু:
ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানে হামলায় যুক্ত নয় আমেরিকা, অথচ নেতানিয়াহু বলছেন, “আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন আমাদের সঙ্গে রয়েছে।” এই দ্বিচারিতাকে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে তেহরান।

ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, “আমাদের কাছে প্রমাণ আছে — আমেরিকার হাত রয়েছে এই আক্রমণে।”

ভারতের আশঙ্কা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ভারতের মাথাব্যথা বাড়বে। ইতিমধ্যেই বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম, চাপ পড়ছে আমদানির খরচে।

ইজরায়েলে হামলার’ প্রতিশ্রুতি থেকে পিছু হটল পাকিস্তান, ইরানের ক্ষোভ তুঙ্গে

ইসলামাবাদ: শুধু ভারতের বিরুদ্ধেই নয়, পাকিস্তানের ‘দ্বিচারিতা’ এবার ধরা পড়ল মুসলিম বিশ্বের মধ্যেও। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে— এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাকিস্তান, এমনটাই দাবি করেছিল ইরান। কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাক সরকার সেই প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করে ইউ-টার্ন নিল।



ঘটনার সূত্রপাত ইরানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সদস্য এবং রেভলিউশনারি গার্ডের শীর্ষ কর্তা জেনারেল মোহসেন রেজাই-র এক বক্তব্য থেকে। তিনি প্রকাশ্যে জানান, “যদি ইজরায়েল ইরানের উপরে পরমাণু হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তান আমাদের হয়ে পরমাণু হামলা চালাবে ইজরায়েলে। পাকিস্তান এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।”

এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বহু বিশেষজ্ঞ মনে করতে শুরু করেন, ইরান-পাকিস্তান জোট হয়তো বড় কিছু পদক্ষেপের দিকে এগোচ্ছে।

ইউ-টার্ন ইসলামাবাদের

কিন্তু, একই দিনেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ সংসদে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “পাকিস্তান এমন কোনও পরমাণু সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়নি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনও পক্ষের হয়ে পরমাণু যুদ্ধ চাই না।”

সমর্থন, কিন্তু সীমিত

যদিও পাকিস্তান ইরানকে একেবারে একঘরে করেনি। ১৪ জুন জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে খোয়াজা আসিফ বলেন,

“ইজরায়েল একযোগে ইরান, ইয়েমেন এবং প্যালেস্টাইনে আক্রমণ চালাচ্ছে। মুসলিম বিশ্ব যদি আজ ঐক্যবদ্ধ না হয়, তাহলে আমাদের সবার ভবিষ্যত অন্ধকার।”

তবে এই বক্তব্য ছিল কেবল ‘নৈতিক সমর্থন’-এর পর্যায়ে। পরমাণু অস্ত্রের প্রশ্নে কোনও আগ্রাসী অবস্থান নিতে ইসলামাবাদ নারাজ বলেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

কী ইঙ্গিত দিচ্ছে এই ঘটনা?

  1. পাকিস্তান আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভারসাম্য রক্ষা করছে— একদিকে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছে, অন্যদিকে আমেরিকা বা ইজরায়েলের সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের ঝুঁকি নিচ্ছে না।

  2. ইরান বিচলিত— কারণ তারা মুসলিম দেশ পাকিস্তানের ওপর ভরসা করেছিল, এখন সেই সমর্থন ঝুলে গেল।

  3. পরমাণু অস্ত্র নিয়ে দায়িত্বশীল নীতি মেনে চলছে পাকিস্তান, তবে এর পিছনে পশ্চিমি দেশগুলোর চাপও গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার:

এই ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য আবারও প্রকাশ পেল। পরমাণু ইস্যুতে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে— তাই পাকিস্তানের সতর্ক ভঙ্গি কূটনৈতিকভাবে হয়তো যৌক্তিক, কিন্তু ইরানের মতো মিত্র দেশের কাছে তা ‘গদ্দারি’ হিসেবেই ধরা পড়ছে।


২৪ ঘণ্টার মাথায় ইরানের পাল্টা আঘাত, তেল আভিভ কাঁপল ভয়াবহ বিস্ফোরণে

তেহরানের পাল্টা প্রত্যাঘাত: লৌহঢাল ভেদ করে তেল আভিভে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইজ়রায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চরম প্রত্যাঘাত হেনেছে ইরান। শুক্রবার গভীর রাতে ইরানের একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইজ়রায়েলের রাজধানী তেল আভিভের প্রাণকেন্দ্রে আছড়ে পড়ে। লক্ষ্য ছিল ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF)-এর সদর দফতর ‘দ্য কিরইয়া’।

কীভাবে ঘটল হামলা?

তেহরান থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ইজ়রায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ বা ‘লৌহঢাল’-এর প্রতিরোধ ভেঙে ঢুকে পড়ে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, তেল আভিভের সেনা সদর দফতরে সরাসরি আঘাত হানছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র। মুহূর্তে বিস্ফোরণ এবং আলোর ঝলকে কেঁপে ওঠে গোটা অঞ্চল।

কোন কোন এলাকায় হামলা?

  • দ্য কিরইয়া: সেনা সদর দফতর, প্রধান লক্ষ্য।

  • রমাত গান: বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি।

  • রিশন লেজ়িয়ন: বহুতলের একাংশ ধসে পড়ে।

 হতাহতের হিসাব:

  • ইজ়রায়েল: ৩ জন নিহত।

  • ইরান: পাল্টা ইজ়রায়েলি হামলায় ৭৮ জনের মৃত্যু, আহত ৩০০+।

প্রতিক্রিয়া:

IDF মুখপাত্র এফি ডিফ্রিন বলেন,

“আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। তবে কিছু ধ্বংসাবশেষই মারাত্মক ক্ষতি করেছে।”

IDF আন্তর্জাতিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি টুইটে লেখেন,

“এই উত্তেজনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী ইরান। তাদের উদ্দেশ্য ইজ়রায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা।”


© all rights reserved
STASNET