ধারী দেবী ও কেদারনাথ: অলৌকিক যোগসূত্র?
২০১৩ সালের ১৬ জুন, রাতারাতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় উত্তরাখণ্ডের পবিত্র কেদারনাথ ধাম। পাহাড় কেঁপে উঠেছিল। ভয়ানক বৃষ্টিপাত, হিমবাহ ফেটে তৈরি হওয়া ভূমিধ্বস, প্রবল জলস্রোত আর কাদা—সবকিছু মিশে গিয়েছিল সেই বিপর্যয়ে। মারা গিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে এক অলৌকিক কাহিনি আজও আলোচনার কেন্দ্রে—‘মা ধারী দেবীর রোষ।’
কে এই মা ধারী দেবী?
উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলার আলকানন্দা নদীর ধারে বিরাজমান মা ধারী দেবীকে হিমালয়ের রক্ষাকালীরূপে মানা হয়। স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, মা ধারী দেবীর বিগ্রহ যেখানে স্থাপিত থাকে, সেখানকার মানুষ প্রাকৃতিক ও অপার্থিব বিপদ থেকে সুরক্ষিত থাকেন। কিন্তু সেই ১৬ জুনের ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল মা ধারী দেবীর বিগ্রহ—এক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের জন্য।
এটাই কি ছিল “অপশকুন”?
স্থানীয়রা বলেন,
“যেই মূর্তি সরানো হল, সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি রেগে গেল। সেই রাতেই ঘটল ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর দুর্যোগ।”
অনেকেই মনে করেন, মা ধারী দেবীর রোষেই নেমে এসেছিল সেই ভয়ংকর ধ্বংসের স্রোত—যা শুধুমাত্র প্রকৃতি নয়, যেন এক অলৌকিক শক্তির রূপ নিয়েছিল। কেদারনাথ মন্দির ঠিকঠাক থাকলেও, আশেপাশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। কাকতালীয় হলেও, এই ঘটনাই বহু মানুষের মনে সৃষ্টি করে ধর্মীয় আশ্চর্য এবং ভক্তির নতুন এক অধ্যায়।
বিজ্ঞান বনাম বিশ্বাস
বিজ্ঞান বলে, চোরাবালি, গ্লেসিয়ার ফাটল, টানা বর্ষণ এবং মানুষের অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ কাজের ফলেই এই দুর্যোগ হয়েছিল। কিন্তু বহু স্থানীয় বাসিন্দা ও তীর্থযাত্রী আজও বিশ্বাস করেন, এটা ছিল মা ধারী দেবীর অভিশাপ।
আজও প্রতিবছর ১৬ জুন এলেই কেঁপে ওঠে পাহাড়বাসীর মন।
এটা শুধুই প্রকৃতির খেলা? নাকি ঈশ্বরের প্রতিশোধ? কেদারনাথ বিপর্যয়ের পিছনে কি প্রকৃতি, মানুষ, না অলৌকিক শক্তির সম্মিলন—এই প্রশ্ন এখনও ঘুরে বেড়ায় হিমালয়ের পবিত্র বাতাসে।
আপনি কী বিশ্বাস করেন? মা ধারী দেবীর রোষই কি কেদারনাথ ধ্বংসের কারণ? নিচে কমেন্টে জানান মতামত।